المقصد الأول: العقيدة

قال تعالى: {يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي نَزَّلَ عَلَى رَسُولِهِ وَالْكِتَابِ الَّذِي أَنْزَلَ مِنْ قَبْلُ وَمَنْ يَكْفُرْ بِاللَّهِ وَمَلاَئِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا *}. [النساء:136]

1 - (ق) عَن ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم: (بُنِيَ الْإِسْلاَمُ عَلَى خَمْسٍ: شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالحَجِّ، وَصَوْمِ رَمَضَانَ) .

2 - عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلّى الله عليه وسلّم فِي سَفَرٍ، فَأَصْبَحْتُ يَوْماً قَرِيباً مِنْهُ وَنَحْنُ نَسِيرُ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ! أَخْبِرْنِي بِعَمَلٍ يُدْخِلُنِي الجَنَّةَ، وَيُبَاعِدُنِي من النَّارِ.
قَالَ: (لَقَدْ سَألْتَنِي عَنْ عَظِيمٍ، وَإِنَّهُ لَيَسِيرٌ عَلَى مَنْ يَسَّرَهُ اللهُ عَلَيْهِ: تَعْبُدُ اللهَ وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئاً، وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤْتِي الزَّكَاةَ، وَتَصُومُ رَمَضَانَ، وَتَحُجُّ البَيْتَ) .
ثُمَّ قَالَ: (أَلاَ أَدُلُّكَ عَلَى أَبْوَابِ الخَيْرِ: الصَّوْمُ جُنَّةٌ
[1] ، وَالصَّدَقَةُ تُطْفِئُ الخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ المَاءُ النَّارَ، وَصَلاةُ الرَّجُلِ مِنْ جَوْفِ اللَّيْلِ) ، قَالَ: ثُمَّ تَلاَ {تَتَجَافَى جُنُوبُهُمْ عَنِ الْمَضَاجِعِ}، حَتَّى بَلَغَ: {يَعْمَلُونَ} [السجدة:16، 17] .
ثُمَّ قَالَ: (أَلاَ أُخْبِرُكَ بِرَأْسِ الْأَمْرِ كُلِّهِ وَعَمُودِهِ وَذِرْوَةِ سَنَامِهِ) ؟ قُلْتُ: بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ! قَالَ: (رَأْسُ الْأَمْرِ الْإِسْلاَمُ، وَعَمُودُهُ الصَّلاةُ، وَذِرْوَةُ سَنَامِهِ الجِهَادُ) .
ثُمَّ قَالَ: (أَلاَ أُخْبِرُكَ بِمَلاَكِ ذَلِكَ
[2]
كُلِّهِ) ؟ قُلْتُ: بَلَى يَا رسول اللهِ! فَأَخَذَ بِلِسَانِه،ِ قَالَ: (كُفَّ عَلَيْكَ هَذَا) ، فَقُلْتُ: يَا نَبِيَّ اللهِ! وَإِنَّا لَمُؤَاخَذُونَ بِمَا نَتَكَلَّمُ بِهِ؟ فَقَالَ: (ثَكِلَتْكَ [3] أُمُّكَ يَا مُعَاذُ! وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ، أَوْ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ؛ إِلاَّ حَصَائِدُ ألسِنَتِهِمْ) .

[ت2616/ جه3973]

* صحيح.

4 - (ق) عن عُمَرَ بْنِ الخَطَّابِ رضي الله عنه قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلّى الله عليه وسلّم يَقُولُ: (يَا أَيُّهَا النَّاسُ! إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّةِ [1] ، وَإِنَّمَا لاِمْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ [2] ، فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ هَاجَرَ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا، أَوْ امْرَأَةٍ يَتَزَوَّجُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ) .

‘উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফূ‘ হিসেবে বর্ণিত, “সব কাজ (এর প্রাপ্য) হবে নিয়্যাত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে। তাই যার হিজরাত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোনো মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে তবে তার হিজরত সে উদ্দেশেই হবে, যে জন্যে সে হিজরত করেছে।”

5 - (م) عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ الله صلّى الله عليه وسلّم يَقُولُ: (إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ، فَأُتِيَ بِهِ، فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا. قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ، قَالَ: كَذَبْتَ! وَلكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ؛ فَقَدْ قِيلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ.
وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ، فَأُتِيَ بِهِ، فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا. قَالَ: فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا؟ قَالَ: تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ. قَالَ: كَذَبْتَ! وَلكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لَيُقَالَ عَالِمٌ، وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ؛ فَقَدْ قِيلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّار.
وَرَجُلٌ وَسَّعَ الله عَلَيْهِ، وَأَعْطَاهُ مِنْ أصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ، فَأُتِيَ بِهِ، فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا. قَالَ: فَمَا عَملْتَ فِيهَا؟ قَالَ: مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلاَّ أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ. قَالَ: كَذَبْتَ! وَلكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ؛ فَقَدْ قِيلَ، ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ، ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ) .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, “কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে হচ্ছে এমন একজন, যে শহীদ হয়েছিল। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং আল্লাহ তার নি‘আমত রাশির কথা তাকে বলবেন এবং সে তার সবটাই চিনতে পারবে (যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে)। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, এর বিনিময়ে কী আমল করেছিলে? সে বলবে, আমি আপনারই পথে যুদ্ধ করেছি; এমন কি শেষ পর্যন্ত শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছ। তুমি বরং এ জন্যেই যুদ্ধ করেছিলে যাতে লোকেরা তোমাকে বলে তুমি বীর। (দুনিয়াতে) তা বলা হয়েছে। এরপর নির্দেশ দেওয়া হবে। সে মতে তাকে উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার করা হবে, যে জ্ঞানার্জন ও বিতরণ করেছে এবং কুরআন অধ্যায়ন করেছে। তখন তাকে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ তা‘আলা তার প্রদত্ত নি‘আমতের কথা তাকে বলবেন এবং সে তা চিনতে পারবে (যথারীতি তার স্বীকারোক্তিও করবে)। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, এতো বড় নি‘আমত পেয়ে বিনিময়ে তুমি কী করলে? উত্তরে সে বলবে, আমি জ্ঞানার্জন করেছি এবং তা শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমারই সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন অধ্যায়ন করেছি। উত্তরে আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলেছে। তুমি তো জ্ঞান অর্জন করেছিলে এজন্যে যাতে লোকে তোমাকে জ্ঞানী বলেন। কুরআন তিলাওয়াত করেছিলে এ জন্যে যাতে লোকেরা বলে সে একজন ক্বারী। (দুনিয়াতে) তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেওয়া হবে এর মতো তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তির বিচার হবে যাকে আল্লাহ তা‘আলা স্বচ্ছলতা এবং সর্ববিধ সম্পদ দান করেছেন। তাকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রদত্ত নি‘আমত সমূহের কথা তাকে বলবেন। সে তা চিনতে পারবে (যথারীতি তা স্বীকারোক্তিও করবে)। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, এ সব নি‘আমতের বিনিময়ে তুমি কী আমল করেছো? উত্তরে সে বলবে, সম্পদ ব্যয়ের এমন কোনো খাত নেই যাতে সস্পদ ব্যয়ে আপনি পছন্দ করেন; অথচ আমি সে খাতে আপনার সন্তুষ্টির জন্যে কিছু করি নি (অর্থাৎ আল্লাহর পছন্দকৃত সকল পন্থায় সম্পদ ব্যয় করেছি)। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি বরং এ জন্যে তা করেছিলে যাতে লোকেরা তোমাকে “দানবীর” বলে অভিহিত করে। আর দুনিয়াতে তা বলা হয়েছে। তারপর নির্দেশ দেওয়া হবে সে মতে তাকেও উপুড় করে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

6 - عن أَبي كَبْشَةَ الْأَنّْمَارِيِّ : أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم يَقُولُ: (ثَلاَثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ، وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثاً فَاحْفَظُوهُ:
قَالَ: مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ، وَلاَ ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلَمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلاَّ زَادَهُ اللهُ عِزّاً، وَلاَ فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلاَّ فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ) أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا.
(وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثاً فَاحْفَظُوهُ، قَالَ: إِنَّمَا الدُّنْيَا لِأَرْبَعَةِ نَفَرٍ: عَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ مَالاً وَعِلْماً، فَهُوَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ، وَيَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ، وَيَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقّاً، فَهَذَا بِأَفْضَلِ المَنَازِلِ؛ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ عِلْماً وَلَمْ يَرْزُقْهُ مَالاً، فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ، يَقُولُ: لَوْ أَنَّ لِي مَالاً لَعَمِلْتُ بِعَمَلِ فُلاَنٍ، فَهُوَ بِنِيَّتِهِ، فَأَجْرُهُمَا سَوَاءٌ. وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ مَالاً وَلَمْ يَرْزُقْهُ عِلْماً، فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ
[1] ، بِغَيْرِ عِلْمٍ، لاَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ، وَلاَ يَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ، وَلاَ يَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقّاً، فَهَذَا بِأَخْبَثِ المَنَازِلِ. وَعَبْدٍ لَمْ يَرْزُقْهُ اللهُ مَالاً وَلاَ عِلْماً، فَهُوَ يَقُولُ: لَوْ أَنَّ لِي مَالاً لَعَمِلْتُ فِيهِ بِعَمَلِ فُلاَنٍ، فَهُوَ بِنِيَّتِهِ، فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ) .

আবূ কাবশাহ আমর ইবন সা‘দ আল-আনমারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত, “তিনটি বিষয়ে আমি শপথ করছি এবং সেগুলির বিষয়ে তোমাদের বলছি। তোমরা এগুলোর সংরক্ষণ করবে। তিনি বললেন, দান-সদকার কারণে কোনো বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। কোনো বান্দা যদি কোনো বিষয়ে অত্যাচারিত হয় আর তাতে সে ধৈর্য ধারণ করে তবে এতে আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তার ইজ্জত-সম্মান বাড়িয়ে দেন। কোনো বান্দা যখন ভিক্ষার দরজা খুলে তখন আল্লাহ তা‘আলা অবশ্যই তার ওপর অভাবের দরজাও খুলে দেন অথবা তিনি এ ধরনের কোনো কথা বলেছেন। তোমাদের আমি একটি হাদীস বলছি, তোমরা সেটির খুব হেফাযত করবে। “এ দুনিয়া হলো চারজনের, যে বান্দাকে আল্লাহ তা‘আলা সম্পদ ও ইলম দান করেছেন আর সে এই ক্ষেত্রে তার রবকে ভয় করে এবং এর মাধ্যমে সে আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুন্ন রাখে ও তাতে আল্লাহর হক সম্পর্কেও সচেতন, সেই বান্দার মর্যাদা হলো সর্বোচ্চ স্তরে। আরেক বান্দা হলো যাকে আল্লাহ তা‘আলা ইলম দান করেছেন; কিন্তু তাকে সম্পদ দেন নি; অথচ সে সৎ নিয়তের অধিকারী। সে বলে, আমার যদি সম্পদ থাকত তাহলে আমি অমুক (প্রথমোক্ত) ব্যক্তির আমলের ন্যায় আমল করতাম। নিয়াত অনুসারেই এই ব্যক্তির মর্যাদা নির্ধারণ হবে। সুতরাং এদের উভয়ের সাওয়াব হবে সমান। অপর এক বান্দা হলো যাকে আল্লাহ তা‘আলা সম্পদ দিয়েছেন; কিন্তু ইলম দেন নি। সে তার সম্পদ ইলম ছাড়াই বিভ্রান্তভাবে নফসের খামখেয়ালী অনুসারে ব্যয় করে, এ ব্যাপারে সে তার রবের তাকওয়া অবলম্বন করে না, তা দিয়ে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করে না এবং এই ক্ষেত্রে আল্লাহর হক সম্পর্কেও সচেতন নয়। এই ব্যক্তির স্থান হলো সবচেয়ে নিম্নস্তরে। অন্য এক বান্দা হলো যাকে আল্লাহ তা‘আলা সম্পদও দেন নি ইলমও দেন নি; কিন্তু সে বলে, আমার যদি সম্পদ থাকত তবে অমুক ব্যক্তির ন্যায় (প্রবৃত্তি অনুসারে) আমল করতাম। তার স্থানও নির্ধারিত হবে তার নিয়ত অনুসারে। সুতরাং এদের উভয়েরই গুনাহ হবে সমান।

ت2325/ جه4228] [

* حسن صحيح.

10 - (م) عَن ابْنِ شُمَاسَةَ المَهْرِيِّ قَالَ: حَضَرْنَا عَمْرَو بْنَ العَاصِ وَهُوَ فِي سِيَاقَةِ المَوْتِ [1] ، فَبَكَى طَوِيلاً وَحَوَّلَ وَجْهَهُ إِلَى الجِدَارِ، فَجَعَلَ ابْنُهُ يَقُولُ: يَا أَبَتَاهُ! أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم بِكَذَا؟ أَمَا بَشَّرَكَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم بِكَذَا؟ قَالَ: فَأَقْبَلَ بِوَجْهِهِ، فَقَالَ: إِنَّ أَفْضَلَ مَا نُعِدُّ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ، إِنِّي قَدْ كُنْتُ عَلَى أَطْبَاقٍ ثَلاَثٍ [2] :
لَقَدْ رَأَيْتُنِي وَمَا أَحَدٌ أَشَدَّ بُغْضاً لِرَسُولِ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم مِنِّي، وَلاَ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أَكُونَ قَدْ اسْتَمْكَنْتُ مِنْهُ فَقَتَلْتُهُ، فَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الحَالِ لَكُنْتُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ.
فَلَمَّا جَعَلَ اللهُ الْإِسْلاَمَ فِي قَلْبِي، أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلّى الله عليه وسلّم، فَقُلْتُ: ابْسُطْ يَمِينَكَ فَلْأُبَايِعْكَ، فَبَسَطَ يَمِينَهُ، قَالَ: فَقَبَضْتُ يَدِي. قَالَ: (مَا لَكَ يَا عَمْرُو) ؟ قَالَ قُلْتُ: أَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِطَ قَالَ: (تَشْتَرِطُ بِمَاذَا) ؟ قُلْتُ: أَنْ يُغْفَرَ لِي، قَالَ: (أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ الْإِسْلاَمَ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ؟ وَأَنَّ الهِجْرَةَ تَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلِهَا؟ وَأَنَّ الحَجَّ يَهْدِمُ مَا كَانَ قَبْلَهُ) ؟.
وَمَا كَانَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيَّ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم، وَلاَ أَجَلَّ فِي عَيْنِي مِنْهُ، وَمَا كُنْتُ أُطِيقُ أَنْ أَمْلَأَ عَيْنَيَّ مِنْهُ إِجْلاَلاً لَهُ، وَلَوْ سُئِلْتُ أَنْ أَصِفَهُ مَا أَطَقْتُ، لِأَنِّي لَمْ أَكُنْ أَمْلَأُ عَيْنَيَّ مِنْهُ، وَلَوْ مُتُّ عَلَى تِلْكَ الحَالِ لَرَجَوْتُ أَنْ أَكُونَ مِنْ أَهْلِ الجَنَّةِ.
ثُمَّ وَلِينَا أَشْيَاءَ مَا أَدْرِي مَا حَالِي فِيهَا، فَإِذَا أَنَا مُتُّ، فَلاَ تَصْحَبْنِي نَائِحَةٌ وَلاَ نَارٌ، فَإِذَا دَفَنْتُمُونِي؛ فَشُنُّوا عَلَيَّ التُّرَابَ
[3]
شَنّاً، ثُمَّ أَقِيمُوا حَوْلَ قَبْرِي قَدْرَ مَا تُنْحَرُ جَزُورٌ، وَيُقْسَمُ لَحْمُهَا، حَتَّى أَسْتَأْنِسَ بِكُمْ، وَأَنْظُرَ مَاذَا أُرَاجِعُ بِهِ رُسُلَ رَبِّي.

ইবনে শিমাসাহ আল-মিহরি হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমর ইবনে আ’স রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর মরণো¦মুখ সময়ে আমরা তাঁর নিকটে উপস্থিত হলাম। তিনি অনেক ক্ষণ ধরে কাঁদতে থাকলেন এবং দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরূপ অবস্থা দেখে তাঁর এক ছেলে বলল, ‘আব্বাজান! আপনাকে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুক জিনিসের সুসংবাদ দেননি? আপনাকে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুক জিনিসের সুসংবাদ দেননি?’ এ কথা শুনে তিনি তাঁর চেহারা সামনের দিকে ক’রে বললেন, আমাদের সর্বোত্তম পুঁজি হল, এই সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল। আমি তিনটি স্তর অতিক্রম করেছি। (এক) আমার চেয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি বড় বিদ্বেষী আর কেউ ছিল না। তাঁকে হত্যা করার ক্ষমতা অর্জন করাই ছিল আমার তৎকালীন সর্বাধিক প্রিয় বাসনা। যদি (দুর্ভাগ্যক্রমে) তখন মারা যেতাম, তাহলে নিঃসন্দেহে আমি জাহান্নামী হতাম। (দুই) তারপর যখন আল্লাহ তাআলা আমার অন্তরে ইসলাম দান করলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট হাযির হয়ে নিবেদন করলাম, ‘আপনার ডান হাত প্রসারিত করুন। আমি আপনার হাতে বায়আত করতে চাই।’ বস্তুতঃ তিনি ডান হাত বাড়িয়ে দিলেন। কিন্তু আমি আমার হাত টেনে নিলাম। তিনি বললেন, “আমর! কী ব্যাপার?” আমি নিবেদন করলাম, ‘একটি শর্ত আরোপ করতে চাই।’ তিনি বললেন, “শর্তটি কী?” আমি বললাম, ‘আমাকে ক্ষমা করা হোক---শুধু এতটুকুই।’ তিনি বললেন, “তুমি কি জানো না যে, ইসলাম পূর্বের সমস্ত পাপকে মিটিয়ে দেয়, হিজরত পূর্বের সমস্ত পাপকে নিশ্চিহ্ন ক’রে ফেলে এবং হজ্জ ক্ষমা ও পূর্বের পাপসমূহ ধ্বংস ক’রে দেয়?” তখন থেকে আমার নিকট রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম অপেক্ষা অধিক প্রিয় মানুষ আর কেউ নেই। আর আমার দৃষ্টিতে তাঁর চেয়ে সম্মানী ব্যক্তি আর কেউ নেই। তাঁকে সম্মান ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার অবস্থা এরূপ ছিল যে, তাঁর দিকে নয়নভরে তাকাতে পারতাম না। যার ফলে আমাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে যে, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গঠনাকৃতি কিরূপ ছিল?’ তাহলে আমি তা বলতে পারব না। এ অবস্থায় যদি আমার মৃত্যু হয়ে যেত, তাহলে আশা ছিল যে, আমি জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (তিন) তারপর বহু দায়িত্বপূর্ণ বিষয়াদির খপ্পরে পড়লাম। জানি না, তাতে আমার অবস্থা কী? সুতরাং আমি মারা গেলে কোন মাতমকারিণী অথবা আগুন যেন অবশ্যই আমার (জানাযার) সাথে না থাকে। তারপর যখন আমাকে দাফন করবে, তখন যেন তোমরা আমার কবরে অল্প অল্প ক’রে মাটি দেবে। অতঃপর একটি উট যবেহ ক’রে তার মাংস বন্টন করার সময় পরিমাণ আমার কবরের পাশে অপেক্ষা করবে। যাতে আমি তোমাদের সাহায্যে নিঃসঙ্গতা দূর করতে পারি এবং আমার প্রভুর প্রেরিত ফিরিশতারা কিভাবে আমার প্রতি উত্তর করে সেটা দেখতে পারি।

11 - عَنْ أَنَسٍ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلى النَّبِيِّ صلّى الله عليه وسلّم فَقَالَ: يَا رَسُولُ اللهِ، مَا تَرَكْتُ حَاجَّةَ ولا دَاجَّةَ [1] إِلاَّ قَدْ أَتَيْتُ. قَالَ: (أَلَيْسَ تَشْهَدُ أَنْ لا إِلـهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً رَسُولُ اللهِ؟) ثَلاثَ مراتٍ. قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: (فَإِنَّ ذَلكَ يَأْتي عَلى ذَلكَ) .

[مخ5/1773]

* إسناده صحيح.

12 - (م) عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم أَنَّهُ قَالَ: (وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ! لاَ يَسْمَعُ بِي أَحَدٌ مِنْ هَذِهِ الْأُمَّةِ يَهُودِيٌّ وَلاَ نَصْرَانِيٌّ، ثُمَّ يَمُوتُ، وَلَمْ يُؤْمِنْ بِالَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ؛ إِلاَّ كَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ) .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফূ সনদে বর্ণিত, “যার হাতে মুহাম্মাদের জীবন তার শপথ করে বলছি, এ উম্মাতের যে কেউ চাই সে ইয়াহুদী হোক বা খৃষ্টান হোক আমার আগমনের সংবাদ পাওয়ার পর সে আমাকে যে বিষয়াবলী নিয়ে পাঠিয়েছেন তার প্রতি ঈমান না এসে মারা যায়, সে অবশ্যই জাহান্নামী হবে।”

14 - (ق) عَنْ أَبِي ذَرٍّ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم: (أَتَانِي آتٍ مِنْ رَبِّي، فَأَخْبَرَنِي ـ أَوْ قَالَ: بَشَّرَنِي ـ أَنَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِي لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئاً، دَخَلَ الجَنَّةَ) . قُلْتُ: وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ؟ قَالَ: (وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ) .

আবূ যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি একদা নবী সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মদীনার কালো পাথুরে যমীনে হাঁটছিলাম। উহুদ পাহাড় আমাদের সামনে পড়ল। তিনি বললেন, “হে আবূ যার! এতে আমি খুশী নই যে, আমার নিকট এই উহুদ পাহাড় সমান স্বর্ণ থাকবে, এ অবস্থায় তিনদিন অতিবাহিত হবে অথচ তার মধ্য থেকে একটি দীনারও আমার কাছে অবশিষ্ট থাকবে। অবশ্য তা থাকবে যা আমি ঋণ আদায়ের জন্য বাকী রাখব অথবা আল্লাহর বান্দাদের মাঝে এইভাবে এইভাবে এইভাবে নির্দেশ দেওয়ার জন্যে রাখব, অর্থাৎ ডানে, বামে ও পিছনে খরচ করব।” অতঃপর এগিয়ে চললেন, এবং বললেন, “প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন নিঃস্ব হবে। অবশ্য সে নয় যে সম্পদকে এইভাবে এইভাবে এইভাবে ডানে, বামে ও পিছনে ব্যয় করে। কিন্তু এ রকম লোকের সংখ্যা নেহাতই কম।” তারপর তিনি আমাকে বললেন, “তুমি এখানে বসে থাক, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে (ফিরে) এসেছি।” এরপর তিনি রাতের অন্ধকারে চলতে লাগলেন, এমনকি শেষ পর্যন্ত তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। হঠাৎ আমি জোরে এক শব্দ শুনলাম। আমি ভয় পেলাম যে, কোনো শত্রু হয়তো নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে পড়েছে। সুতরাং আমি তাঁর নিকট যাওয়ার ইচ্ছা করলাম, কিন্তু তাঁর কথা আমার স্মরণ হলো, “তুমি এখানে বসে থাক, যতক্ষণ না আমি তোমার কাছে (ফিরে) এসেছি।” সুতরাং আমি তাঁর ফিরে না আসা পর্যন্ত বসে থাকলাম। (তিনি ফিরে এলে) আমি বললাম, ‘আমি জোরে এক শব্দ শুনলাম, যাতে আমি ভয় পেলাম।’ সুতরাং যা শুনলাম আমি তা তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, “তুমি শব্দ শুনেছিলে?” আমি বললাম, ‘জী হ্যাঁ!’ তিনি বললেন, “তিনি জিবরীল ছিলেন। তিনি আমার কাছে এসে বললেন, ‘আপনার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মরবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ আমি বললাম, ‘যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে তবুও কি?’ তিনি বললেন, ‘যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে।”