الكِتَابُ الثّاني: الأَخـلاق والآداب

3326 - عَنْ عَائِشَةَ رضي الله عنها قَالَتْ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم يَقُولُ: (إِنَّ الْمُؤْمِنَ لَيُدْرِكُ بِحُسْنِ خُلُقِهِ دَرَجَةَ الصَّائِمِ الْقَائِمِ) .

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে মারফু‘ হিসেবে বর্ণিত, “মুমিন ব্যক্তি তার সদাচারের জন্য সাওম পালনকারী ও সালাত আদায়কারী ব্যক্তির সমান মর্যাদা লাভ করে থাকে ।”

3329 - عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم يَقُولُ: (اللَّهُمَّ! أَحْسَنْتَ خَلْقِي، فَأَحْسِنْ خُلُقِي) .

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফু হিসেবে বর্ণিত, “হে আল্লাহ! আপনি আমার গঠনকে যেমন সুন্দর করেছেন, অনুরূপ আমার চরিত্রকেও সুন্দর করুন।”

[حم24392، 25221]

* حديث صحيح، رجاله رجال الشيخين.

3331 - (ق) عَنْ أَبِـي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم: (مَنْ كانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ؛ فَلاَ يُؤْذِ جارَهُ، وَمَنْ كانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ؛ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، وَمَنْ كانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ؛ فَلْيَقُلْ خَيْراً أَوْ لِيَصْمُتْ) .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফূ‘ হিসেবে বর্ণিত, “যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে, নচেৎ চুপ থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানের খাতির করে।

3334 - (م) وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم: (مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا، نَفَّسَ اللهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ. وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ، يَسَّرَ اللهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ. وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِماً، سَتَرَهُ اللهُ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ. وَاللهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ. وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقاً يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْماً، سَهَّلَ اللهُ لَهُ بِهِ طَرِيقاً إِلَى الْجَنَّةِ. وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللهِ، يَتْلُونَ كِتَابَ اللهِ، وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ، إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِينَةُ، وَغَشِيَتْهُمُ الرَّحْمَةُ، وَحَفَّتْهُمُ الْمَلاَئِكَةُ، وَذَكَرَهمُ اللهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ. وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ، لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ) .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মরফূ‘ হিসেবে বর্ণিত, “যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের কোনো পার্থিব দুর্ভোগ দূরীভূত করবে, আল্লাহ তার থেকে কিয়ামতের দিনের দুর্ভোগসমূহের মধ্যে কোনো একটি দুর্ভোগ দূর করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো ঋণ পরিশোধে অক্ষম ব্যক্তির প্রতি সহজ করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার প্রতি সহজ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আর যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা তার মুসলিম ভাইয়ের সহযোগিতা করতে থাকে, আল্লাহও সে বান্দার সাহায্য করতে থাকেন। যে ব্যক্তি এমন পথে চলে- যাতে সে (দীনী) বিদ্যা অর্জন করে, তার জন্য আল্লাহ জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। আর যখনই কোনো সম্প্রদায় আল্লাহর কোনো এক ঘরে একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব পাঠ করে ও নিজেদের মধ্যে তা অধ্যয়ন করে, তখনই (আল্লাহর পক্ষ থেকে) তাদের ওপর প্রশান্তি অবতীর্ণ হয়, তাদেরকে (আল্লাহর) রহমত আচ্ছাদিত করে নেয়, ফিরিশতারা তাদেরকে ঘিরে নেয় এবং আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী (ফিরিশতা)দের মধ্যে তাদের কথা আলোচনা করেন। আর যাকে তার আমল পশ্চাদ্গামী করেছে (অর্থাৎ নেকীর কাজ করে নি) তার বংশ তাকে অগ্রগামী করতে পারবে না।”

3335 - (م) وَعَنْهُ أَيْضاً قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم: (إِنَّ اللهَ عزّ وجل يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ: يَا ابْنَ آدَمَ، مَرِضْتُ فَلَمْ تَعُدْنِي. قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَعُودُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعالَمِينَ؟! قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ عَبْدِي فُلاَناً مَرِضَ فَلَمْ تَعُدْهُ، أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ عُدْتَهُ، لَوَجَدْتَنِي عِنْدَهُ؟
يَا ابْنَ آدَمَ، اسْتَطْعَمْتُكَ فَلَمْ تُطْعِمْنِي. قَالَ: يَا رَبِّ وَكَيْفَ أُطْعِمُكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعَالَمِينَ؟! قَالَ: أَمَا عَلِمْتَ أَنَّهُ اسْتَطْعَمَكَ عَبْدِي فُلاَنٌ، فَلَمْ تُطْعِمْهُ؟ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّكَ لَوْ أَطْعَمْتَهُ، لَوَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي؟
يَا ابْنَ آدَمَ اسْتَسْقَيْتُكَ فَلَمْ تَسْقِنِي. قَالَ: يَا رَبِّ كَيْفَ أَسْقِيكَ وَأَنْتَ رَبُّ الْعالَمِينَ؟! قَالَ: اسْتَسْقَاكَ عَبْدِي فُلاَنٌ، فَلَمْ تَسْقِهِ، أَمَا إِنَّكَ لَوْ سَقَيْتَهُ، وَجَدْتَ ذَلِكَ عِنْدِي) .

আবু হুরায়রাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন বলবেন, ‘হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ ছিলাম, তুমি আমাকে দেখাশুনা করনি।’ সে বলবে, ‘হে আমার রব! কিভাবে আমি আপনাকে দেখাশুনা করব, আপনি তো সৃষ্টিকুলের রব?’ তিনি বলবেন, ‘তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল? অথচ তুমি তাকে দেখাশুনা করনি। তুমি কি জানতে না যে, তুমি যদি তাকে দেখাশুনা করতে, তাহলে অবশ্যই তুমি আমাকে তার কাছে পেতে? হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম, তুমি আমাকে খাওয়াওনি।’ সে বলবে, ‘হে আমার রব! আমি আপনাকে কিভাবে খাওয়াব, আপনি তো সৃষ্টিকুলের রব?’ আল্লাহ বলবেন, ‘তোমার কি জানা ছিল না যে, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল, কিন্তু তাকে তুমি খাবার দাওনি? তোমার কি জানা ছিল না যে, যদি তাকে খাওয়াতে, তাহলে অবশ্যই তা আমার কাছে পেতে? হে আদম সন্তান! তোমার কাছে আমি পানি পান করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার রব! আপনাকে কিরূপে পানি পান করাবো, আপনি তো সকল সৃষ্টির রব?’ তিনি বলবেন, ‘আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে পানি চেয়েছিল, তুমি তাকে পানি পান করাওনি। তুমি কি জানতে না যে, যদি তাকে পানি পান করাতে, তাহলে তা অবশ্যই আমার কাছে পেতে?’’।

3337 - (م) عَنْ أَبِـي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللهِ صلّى الله عليه وسلّم قَالَ: (مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ، وَمَا زَادَ اللهُ عَبْداً بِعَفْوٍ إِلا عِزّاً، وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ للهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللهُ) .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “সাদকাহ মাল কমায় না এবং ক্ষমা করার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা (ক্ষমাকারীর) সম্মান বৃদ্ধি করেন। আর যে কেউ আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য বিনয়ী হবে আল্লাহ তাকে মর্যাদায় উন্নীত করবেন।”